ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামের কথা জানি সবাই। ফুটবলপাগল এই জাতি তার সমস্ত সঞ্চয় উজার করে ১৯৫০ এর বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করেছিল এই স্টেডিয়াম। কোন মান্যগণ্য ব্যক্তি নয়, নামকরণ হয়েছিল পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট নদীটির নামে। বহতা নদী, ইতিহাসের সাক্ষী নদী, সমালোচনার ঊর্ধ্বে নদী, প্রাণের নদী, প্রাণদায়ী নদী। পেছনে ছিল রাফায়েল গাল্ভাও আর পেদ্রো বেরনার্দেস বাস্তোসের স্বপ্নের স্থাপত্য আর সাড়ে নয় কোটি হতদরিদ্র মানুষের ভালবাসা।
দুই লক্ষ দর্শক দিনান্তে দুঃখ ভুলে মেতে উঠতো এখানে, প্রিয় স্বদেশ হেরে গেলে নিস্তব্ধ হয়ে যেত একসাথেই। কেউ পতাকা জড়িয়ে কাঁদতো, কেউ পতাকা পোড়াতো, কেউ স্রষ্টাকে দুষতো, কেউ মদের বোতল ছুঁড়ে ফেলতো, বাঙ্গালি ঘরানার দু-চারজন থেকে থাকলে হয়তো বোতলে মূত্রত্যাগ করে নিচে ছুঁড়ে ফেলতো। এভাবেই গড়ে উঠে অন্য রকম এক দেশাত্ববোধ, ব্রাজিলিয় দেশাত্ববোধ। এখানেই বেড়ে ওঠে রোনাল্ডো, রোমারিও, সক্রেটিস, কার্লোস আলবার্তো, কাফু, রবার্তো কার্লোস, ফ্যালকাও, পেলে, রিভালদো, জিকো। কেমন অদ্ভুত না?
আমরা কিসের জন্য এত দাম দিয়েছি? দেশটাকে পাবার জন্য দিয়েছি, হ্যাঁ, কিন্তু সে তো ৩৬ বছর আগের কথা। দেশকে গড়বার জন্য কী করেছি? পরিচয় তৈরি করবার মত কী করেছি? কী দেখে যেকেউ বুঝবে এখানে বাংলা এসেছিলো, বাঙ্গালি এসেছিলো?
No comments:
Post a Comment