“ইয়া, গিম্মি আ ডা’ খৌক উইথ দ্যাট প্লিজ।”
ডা’... আহ, কম্বো অ্যান্ড ডায়েট কোক, দ্যাট’ল বি সিক্স ফিফটি সেভেন ফর ইয়ু, ম্যাম।
“আ’ল লাভ ইয়ু ফর লাইফ ইফ ইয়ু কুড অ্যাড সাম রুট বিয়ার টু ইট।”
কোন ব্যাপার না। আপনার জন্য সব সই। পারি তো খাবারটাও মুফতে দিতাম। ছয় টাকা সাতান্ন পয়সা। অশেষ মেহেরবানি আপনার, হ্যাভ আ নাইস ওয়ান!
“ওহ, দ্যাটস সো সুইট অফ ইয়ু। ইয়ু হ্যাভ আ নাইস ওয়ান ঠু, হানি।”
(আহ, আই লাভ দ্য সাউথ! ধরায় কোথায় এমন চপলা, হেলিয়া দুলিয়া, হাসিয়া ঢুলিয়া, কহিবে অধমে প্রেম জাগাইয়া, শুধাইছো আমায় এত যতনিয়া!)
“আই বাইট!”
(ডাকু মেয়ে! বুকে লিখে ঘোষণা দিয়ে কামড়ায়! তাকাতে দেখে ফেললো না তো? আমার দোষ কী? আমি তো মাথা উঁচু করেই আছি! আমার মাথা অতটুকু যাওয়া তো আমার দোষ না। নাহ, ছয়ফুটিদের দেশে সাড়ে পাঁচ হওয়ার মত কিছু নাই।)
“স্টেয়ার অ্যাট ইওর ওউন রিস্ক!”
(মজার মেসেজ। নাহ, এর পরেরটার দিকে আর তাকানো যাবে না। বেশি খেতে গিয়ে না শেষে ঝামেলায় পড়ি।)
“ঐ লাল সসটা আছে? ঐ যে, মিষ্টি মিষ্টি সস একটা। লাল রঙ।”
সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস। আছে, এই যে নাও। আর কিছু?
“ওহ, আই লাভ ইট। এগ রোল খুবই মজা এটার সাথে।”
কী জানি, আমার তো ভাল লাগে না অত। ঝাল খাও? ঝাল খেলে চিলি সস নিয়ে দেখতে পারো। ওটা বেশি মজা ভাজি কিছুর সাথে।
“ওরে বাবা। নাহ, আমি ঝাল খেতে পারি না তেমন একটা।”
কোন ব্যাপার না। এখানে সবাই খুব মাইল্ড খাবার খায়। তোমরা যেটাকে স্পাইসি বল, সেটা আমাদের কাছে কিছুই না।
“ও বৌ, কী নিবা তোমার খাবারের সাথে? একটা বড় মিস্টার পিব আমাদের জন্য? এই যে দেখ, এই ছেলেটা এখনই টাকা চাবে। এরা শুদ্ধু আমার টাকা চায়। শুনো, এই যে বললো...”
ইয়ু হ্যাড আ নাইস ডে, স্যার?
“হাহ, হাহ, হাহ...”
ইটস স্টিল থার্টিন ফিফটিন, দো!
“হে, হোল্ড দি আইস, ম্যান।”
জ্বী, বুঝলাম না, স্যার। বরফগুলো তো ঠান্ডাই আছে। বিশেষ কিছু করতে হবে? না, মানে আর কী করতে হবে বুঝলাম না।
“হি মিনস নো আইস, প্লিজ।”
ওহ! থুক্কু। থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ, ম্যাম। বেকুবের মত একটা প্রশ্ন করে ফেলেছিলাম। বাঁচালেন।
“অয় মাইট, অ্যাভিং আ গ্র্যান্ড ডে দেয়ার? বিজি? লুকস লাইক বিজনেস ইজ গুড টুডে।”
হ্যাঁ, চলে যায়। লোক ভালই। লম্বা দিন। আমাদের জন্য তো একই রকম, তবে ম্যানেজার খুবই খুশি। ডগমগ করছে, দেখছো না? আমাদের তো আর শনিবারে কোন কমিশন নেই। বরং ভাল কাজ করলে যেন শাস্তি হিসাবে শনিবারে ডেকে আনা হয়।
“রিফিল প্লিজ, স্যার।”
ফিফটি সেন্টস, প্লিজ।
“হোয়াট? হাউ মাচ?”
ফিফটি সেন্টস। ফিফটি সেন্টস। এর... ফিট্টি সেন’স, স্যার। কোন ধরনের ড্রিঙ্ক দিবো?
“আহ, ফিট্টি সেন’স। রু বিয়াহ, প্লিজ।”
এই যে আপনার রুট বিয়ার।
“আই মে নট বি পারফেক্ট, বাট পার্টস অফ মি আর প্রিটি অসাম।”
(সুন্দরী, তোমার মত পুতুলও যদি এরকম বলে, তাহলে যাই কোথায়?)
“তোমাদের এখানে কোন ভেজিটেরিয়ান মিল আছে?”
ভাত আছে, লোমেইন নুডুলস আছে, এবং কিছু মিক্সড ভেজিটেবল আছে। এতে হবে? না, এগ রোলেও কিছু চিকেন আছে। ভেজিটেবল এগ রোল করে দিতে পারি কিছু। স্যার, ইয়ে, কিছু ক্র্যাব র্যা ঙ্গুন নিতে পারেন। দুঃখিত। আমি শুনেছি যে আপনি সবজি খাবেন শুধু। ওটায় কোন কাঁকড়া নেই। শুধু ক্রিম চিজ। আমি তো নাম দেই নাই এরকম। ম্যানেজার বলতে পারবে হয়তো।
“আই অ্যাম ব্যাড উইথ নেমস, ক্যান আই জাস্ট কল ইয়ু ব্যাডঅ্যাস?”
না, মিষ্টি আলু ঠিক চাইনিজ খাবার না। সকালে বিক্রি করি নাস্তার জন্য। জানি, জানি। আমারও বেশ মজা লেগেছিল প্রথমে। তবে খেতে খুব মজা। চেখে দেখবেন একটা? মজা না? জানতাম পছন্দ হবে। দিয়ে দেই কিছু? মাত্র এক ডলার বেশি লাগবে মাত্র। পছন্দ হবে তোমার। নাও তো। পঞ্চাশ পয়সা দিয়ো নাহয়।
“গিম্মি ব্যাঁক?”
এক্সকিউজ মি! দিলাম তো তোমার খুচরা পয়সা। এই যে, তিন টাকা তেতাল্লিশ পয়সা।
“নোঁ, ইয়ু গিঁভ মি ব্যাঁক টুঁ ক্যাঁরি?”
আহ, ব্যাগ! স্যরি অ্যাবাইট ইট, ম্যাম। হিয়ার ইয়ু গো।
“ইয়ু ওঁয়ার্ক ছাইনিজ, ইয়ু নোঁ আন্ডাস্ট্যাঁ?”
ভুল হয়ে গেছে। আসলে, লোকজন বেশি তো, একটূ অন্যমনস্ক হয়ে গেছিলাম। আগের জনের সাথে মিলিয়ে ফেলেছিলাম। কিউট ড্রেস, বাই দ্য ওয়ে!
“আই অ্যাম নট অ্যাজ ইয়ু ড্রাঙ্ক অ্যাজ থিঙ্ক আই অ্যাম।”
মজার লেখা। হ্যাঁ, টি-টা সুন্দর। নাহ, দিন ভালই। তা একটু ব্যস্ত, তবে আরো ব্যস্ত দিন যায়। অবশ্য সেটা শপিং মলে না। ক্যাম্পাসের পাশে। খেলার সময়। ওহ, ম্যান। এই সিজন পুরা ঝাকানাকা হবে। জামার্কাস কি ড্রাফটে নাম্বার ওয়ান হবে বলে মনে হয় তোমার? আমারো মনে হয় ওর হওয়া উচিত। তবে ভয় একটাই। ওকল্যান্ডে যে যাবে তারই ক্যারিয়ার নষ্ট, এইটাই সমস্যা। এক দিকে প্রেস্টিজ, আরেক দিকে প্রতিভার অপচয়। এক্সাক্টলি! আমিও তাই বলি...
“হে আমিগো, ...”
জ্বী, আমি স্প্যানিশ বুঝি না। কী ড্রিঙ্ক নেবেন? জ্বী, বুঝলাম না ঠিক।
“হাবলা এস্পানিওল?”
না। আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশ। ঐ যে, ইন্ডিয়ার পাশে। আমি স্প্যানিশ বলি না। আমি স্বজাতবিদ্রোহী না। সত্যি বলছি। কী ড্রিঙ্ক নেবেন, প্লিজ?
“কক! কক ফর মাই ফ্রেন্দ তু।”
হোয়াট? ওহ, ইয়েস। আপনার জন্যও কোক? আপনিও। জ্বী, আপনার জন্যও। এই যে চার গ্লাস কোক। না, না। কোন ব্যাপার না। আমি কিছুই মনে করি নাই। আমার আসলে কিছু স্প্যানিশ শেখা দরকার চাইনিজে কাজ করার জন্য।
“কী, ভাই, বেচাকিনি কেমন? রাইন্ধা কুলাইতে পারতেসি না, বোজলেন নি?”
এই তো চলে। কিচেনে কী অবস্থা? ভীড় তো ভালই মনে হচ্ছে। স্যাম্পল এই হারে দিলে আরো লোক আসবে। আপনি তো ভিতরে আছেন, ঝামেলা বেশি হবে আপনার। অন্যভাবে দেখলে, একটু হলেও তো বসতে পারেন। আমার তো একটানা দিতে দিতে জান শেষ। এত করে বলি একটা লোক নিতে, তবু খাটাশের মত খাটাবে আমাকে একাই। কিপটার জাত সব। আমারও মাজায় ব্যাথা রে ভাই। এই একবেলায় পনের বালতি বরফ টানলাম।
“হে ম্যান, আমাকে কিছু বাড়তি দাও না। খাস দিলে দোয়া করবো। আরে ম্যানেজার আছে তো কী হয়েছে? দাও তো আরেকটু। ঐটাই ম্যানেজার? হোক। দাও তো একটু বেশি। নাহ, তুমি মানুষ ভাল না। ড্রিঙ্কের জন্যও টাকা দিতে হবে? ডাকাত নাকি তোমরা?”
মিডিয়াম কুলেইড, রাইট, স্যার? হাউ ডু আই নো? ডোন্ট ওয়োরি অ্যাবাইট ইট। জাস্ট এনজয় দ্য মিল। কীভাবে জানি? তিন ঘন্টা ড্রিঙ্ক ঢাললেই বুঝে যাবেন আপনিও। উহু, তেমন কিছু না। নেক্সট ইন লাইন, প্লিজ।
“কেমনে বোজলেন কী নিবো? আপনে তো দেহি কওনের আগেই ঢাইলা ফেলেন।”
গায়ের রঙ। কালোরা সোডা খায় না। সবার আগে নিবে কুলেইড বা ফ্রুট পাঞ্চ। না থাকলে লেমোনেড অথবা অন্য যেকোন রঙ্গিন পানীয়। তাতেও না হলে স্প্রাইট। এর বাইরে কখনই না। সাদা মেয়েরা নিবে ডক্টর পেপার। অখাদ্য, কিন্তু তবু ওটাই নিবে। বয়স্ক মহিলারা নিবে পানি নয়তো ডায়েট কোক। পেট দেখা গেলে ডায়েট কোক, দেখা না গেলে আইস ওয়াটার। ছেলেরা নিবে কোক। আমেরিকান বাদে যেকেউ শুধুই কোক নিবে। সবজিরা বরফ ছাড়া, বড়সড় মহিলারা বেশি বরফ দিয়ে, কালো লোকেরা কম বরফ দিয়ে। ভারতীয় আর মেক্সিকান হলে আলাদা করে চিলি সস নিবে, সাদা মেয়ে হলে সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সস চাবে।
“সেইভ দ্য ড্রামা ফর ইয়োর মামা।”
কী ড্রিঙ্ক নেবেন বুঝতে পারছেন না? ইয়ু ওয়ান্ট আ মিস্টার পিব, ম্যাম। ইয়া, ইটস দ্য সেম অ্যাজ ডক্টর পেপার। হাউ ডু আই নো? হাহ, হাহ। না, আপনার বয়ফ্রেন্ড তো বয়ফ্রেন্ড বলেই জানে না। আমি ড্রিঙ্ক সার্ভ করি বলেই আমি জানি আপনি এটা নেবেন। এগ রোল দেই একটা সাথে? মাত্র ভেজে আনলো। বেশি না, মাত্র নাইন্টি নাইন সেন্টস। সাথে কিছু ট্যাক্স, অফ কোর্স। ক্যাশ অর ক্রেডিট? আমরা পঁচিশ পয়সা চার্জ করি ক্রেডিট কার্ডের জন্য। গোস্যা করবেন না তো এটায়? সাকুল্যে সাত টাকা সাতাত্তর পয়সা। না, ফোর নাইন্টি নাইন তো ড্রিঙ্ক ছাড়া। সাথে বাড়তি এগ রোল আর কার্ড প্রোসেসিং ফি। দাম বেশি? ওয়াও, জামাটা কার জন্য কিনলেন? বয়ফ্রেন্ড? আমারো একটা ছিল এমন।
“মাস্তি মে হো, সাহাব?”
মাস্তি? নট অন দিস সাইড অফ দ্য কাউন্টার, ব্রাদার! এ কী, এই মাংস নিলে কেন? হ্যাঁ, এটা চিকেন, কিন্তু এটাতে তো কুকিং ওয়াইন দেয়। ভেজি এগ রোল তো ভাজে পর্ক এগ রোলের তেলেই। পর্ক এগ রোল? ওহ, ঐ যে চিকেন বলে বিক্রি করছে, ওটাই পর্ক। ভাত বা নুডুলস নিয়ে সস দিয়ে খাও। এই দোকানের ভাত কিন্তু ভাল। বাঙ্গালি ভাই রান্না করেন পিছনে। আরে ধন্যবাদ দেওয়ার কিছু নাই। ব্রাদার হারাম খেলে তো আমিই জাহান্নামে যাবো।
“নামাসঠে! আপ খ্যায়সে হো?”
বাহ, ভাল হিন্দি জানেন তো আপনি। ছিলেন নাকি ওখানে? ইয়া, নামাস্তে টু ইয়ু ঠু।
“আপ হিন্ডি বোলটে হো?”
আমি টুকটাক বুঝি, তবে বলি না। না, বুঝলেও বলি না। আই ॥মেক আ ফুল অফ মাইসেলফ ইনাফ টাইমস আ ডে। হোয়াই বদার ডুইং ইট ওয়ান্স টু মেনি?
“আই উইশ মাই বয়ফ্রেন্ড’স ওয়ালেট ওয়াজ অ্যাজ বিগ অ্যাজ হিজ বাকল।”
না, ফর্চুন কুকি ফ্রি না। মাফ করে দেন, ম্যাম। আমি আসলেই জানি না কেন ফ্রি না। টেক্সাসে ফ্রি হলে আমি কী করবো, বলেন? আমি তো ছাপোষা লোক। আচ্ছা ঠিক আছে, এই যে নেন। না, দাম দিতে হবে না। আমি টিপ জার থেকে কিছু রেখে দিচ্ছি এখানে। বেস্ট অফ লাক!
“হৈ! কিয়ারলেন এইডা? আপনের বাশক থেইক্কা নিয়া রাখলেন ক্যান?”
এমনি। কী দরকার ঝামেলা করে, বলেন? আর, কয়টাই বা পয়সা। অযথা দোকানের বদনাম। না দিলে নাই। আমি তো বাড়তি টাকা চাই না এটার জন্য। মামুলি কয়টা পয়সার জন্য লোকগুলো অযথা আমাকে গালি দিবে সারাজীবন। আমাকে দিলেও ঝামেলা ছিল না, দিবে তো আমাদের পুরা জাতকেই। বাকিরা কী করে জেনে কী লাভ, বলেন? আমার মন চাইলো, দিয়ে দিলাম।
“এই, কী কর এগুলো? আমার গায়ে গরম মাংস ফেললে কেন?”
আমি তো শুধু ফ্রেশ মাংসের ট্রে বসালাম, ম্যাডাম। এখান থেকে তো আপনার গায়ে মাংস পড়ার কথা না।
“আ পিস অফ হট মিট ফেল অন মি!”
পড়ে থাকলে আমি খুবই দুঃখিত, ম্যাডাম। আমি সাবধানেই রাখছিলাম। রাখার আগে তো আপনাকে একটু পেছনে সরে যেতেও বললাম, যাতে কিছু না লাগে।
“আমার গায়ে গরম মাংস পড়েছে! আমার জিন্সের উপর পড়েছে এটা। পুড়ে গেছে ভেতরে। আমাকে বেশি করে মাংস দাও, আর সাথে একটা ফ্রি এগ রোল দাও। ম্যানেজারকে ডাকবো আমি নয়তো। সিকিউরিটি কোথায়?”
(কপাল ভাল তোকে আমি কোন দিন আরামবাগের চিপায় পাবো না। ছাল তুলে ফেলতাম, বেটি। জামায় দাগ নাই, ফ্লোরে মাংস নাই, আসছেন উনি একটা সোরগোল তুলে আমার চাকরি খেতে। সাধে লোকে দেখতে পারে না তোদের? ঠিকই করে ম্যানেজার। এমনই করা দরকার তোদের সাথে। ধ্যাৎ, মুডটাই মেরে দিলো। ভাল্লাগে না আর এই সব। আমার পাখিশাস্ত্র নিয়ে থাকাই ভাল ছিল। আউচ, দুর্ধর্ষ পাখি আসছে একটা।)
“গেট আ লাইফ!”
No comments:
Post a Comment