Saturday, July 19, 2008

শূ্ন্য আটের দিনগুলিঃ বুড়া মাইনষের মত কাশোস ক্যান?

১.১
দুষ্ট ছিলাম আজীবন, নষ্ট ছিলাম না। মৌলিক কিছু বিধিনিষেধ আর মূল্যবোধ মাথার ভেতর খুব পোক্তভাবে ঢুকিয়ে দিয়েছিল বাবা-মা। তার উপর পড়াশুনা করেছি ক্যাথলিক স্কুলে। আমার দৌঁড় তাই উলটাপালটা দৌঁড়নো আর পিড়পিড় করে কথা বলা পর্যন্ত।

নষ্ট ছেলেপুলেদের দেখতাম মহা আনন্দে দিন কাটাচ্ছে। এরা স্যারদের পুচ্ছদেশে চকের গুঁড়ো মারতো, সহপাঠীদের বোন'দের দিকে কুনজর দিতো, ক্লাসে নোংরা বইপত্র নিয়ে আসতো। শাস্তির ভয় এদের কখনোই ছিল না। আমরা ডিটেনশনের নাম শুনেই আতঙ্কে কাঁপতাম, ওরা বেতের বাড়ি খেয়েও হিহি করে হাসতো আর নিজের মত বদমায়েশি করে যেত।

ওরা সংখ্যায় কম ছিল, বড়লোকের পোলাপান ছিল, শিক্ষক-ছাত্র নির্বিশেষে সবাই ওদের হাতে ছিল। খেলতে না পারলেও ওরাই বিভিন্ন টুর্নেমেন্ট আয়োজন করে টিম ক্যাপ্টেন হত। বাকিরা ছিল অচ্ছুৎ, খ্যাত। ওরা আমাদের সাথী ছিল না, কিন্তু কীভাবে যেন প্রতিনিধি হয়ে যেত খুঁটির জোরে। যাক যে কথা।

জানি নে কেন জানি মনে পড়ে গেল। একেবারেই কাকতাল, বিশ্বাস করুন।

১.২
ঠোঁট না নাড়িয়ে কথা বলা ছিল আমার প্রিয় দুষ্টামি গুলোর একটি। একবার ক্লাসে স্যার অংক করতে দিয়ে পায়চারি করছেন। পুরো ক্লাস জুড়ে পড়ানোর বদলে একটু আরামে সময়টা পার করে দেওয়া আর কি। অংক মিলে যাবার পর আমি মনে সুখে আড্ডা মারছি। আশপাশ দিয়ে গেলে গুমগুম আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষক মহাশয় ক্রমাগত আমার পাশ দিয়ে হেঁটে চলছেন। আমিও কথা বলছি, তিনিও বুঝতে পারছেন যে আমি-ই কথা বলছি। তবে ধরতে পারছেন না হাতে-নাতে।

হঠাৎ কাশি এল খুব। নেহায়েত নির্বিষ একটা কাশি দিলাম খুকখুক করে। তৎক্ষণাৎ ধুম করে এক কিল পড়লো পিঠে।

“এই ব্যাটা, বুড়া মাইনষের মত কাশোস ক্যান?”

এটাও কেন জানি মনে পড়ে গেল। কালতাল মাত্র, বিশ্বাস করুন।

No comments: